যে কথা কহিতে তুমি চাও শুধু মোরে,সে তো নহে অজানা আমার; হেমন্তেরেসঙ্গোপনে সে কথা আমিও কয়েছি যেবহুবার; চাঁদের আড়ালে থেকে নিজে। এই চাঁদ! এই পথ! লতা-পাতা-নীড়,এই যে চাঁদিমা ছটা কেমন নিবিড়এলায়ে পড়েছে চুপে রজনীল পরেঘোরালো ঘোলাটে ভাতি ধরণীর ক্রোড়ে। নিশীথ…
মাধবী মালিকা লয়ে আসিল মাধব,সরোবরে সরসিজ কুসুমে আসব্।উরগ উন্মদ তায় ফুলমধু আশেদয়িত দগধে আজ দয়িতা সকাশে। আতর সুরভে আজ আকুল আক্রীড়ললামে ললিত তনু শিরেতে আপীড়।মধুমাসে মধু্আশে অধীর ভুবনচপল পরাণ যাচে মালঞ্চ পবন। মঞ্জরে নব মঞ্জরি পরাণে-বাহিরে,নন্দিত জগজন ঋতুরাজ বিহারে। (২০০৯)
সজল বাদল ঝরিল রে ঝরঝর,বনকুঞ্জনীড় কাঁপিল রে থরথর। কাঁপিল কপোত ধবল পালক তলে,ঝাপিল গগন সঘন মেঘের দলে। শিথানে পশিল মেদুর মেদিনী ঘ্রাণ,শিকর-থকিত জ’লো বায়ু শনশন। দল বেঁধে ওই হাঁসেরা পড়িল জলে,বারি বুদ্বুদ আহ্লাদে মাখিলো কোলে। (২০০৯)
বাদল বধূর মুখর ঝারি কৃপণ কেন!জলধারা নেই, বিরূপ বুঝি হায়, গো কেনো?নিথর তোমার মেঘরথ যে বড় চঞ্চলামুখর মোদের মুখের ভাষা অতি উতলা। নেই কি তোমার করুণা এই ধরার পরে,হা! কহ গো, বিরূপ হেন কিসের তরে?শুকিয়ে গেছে সলিল লীলা নয়ন কোণে?কোন্…
সোনার চামর দুলায়ে গোধূলি ধনিকোথা গেল হেন আঁধার আচল টানি!হায় নিশামুখ! হায় রে তামস তনুরূপ তব গেছে আছে শুধু সুররেণু। (২০০৮)
অবশেষে পৃথিবীতে নামিয়াছে রাত;গভীর প্রশান্তি লয়ে, দীঘির জলেরমতো নিস্পন্দ– শীতল। থেমে গেছে যতছিল কাজ। জগতের সব প্রয়োজনসাঙ্গ হলে পরে, হেমন্তের বেলা শেষেকেবল রিক্ততা কান্না হয়ে আসে; সববাস্তবতা যায় মুছে, কেবল ধূসরঅপার আকাশ থাকে সম্মুখে আমার। সমাধির মতো শব্দহীন নির্জনতাভীড় করে…
ফুল্লরূপী সাঁঝবেলা রজনী নিলীন,তোমাতে শরণ লভে জগজন দীন। তোমারি আঁচলতলে পূর্ণশশী ঝলেযেন মোতি হার আকাশ অঙ্গনা গলে, যেন চারু হাসি হাসে নবফোটা কলিহের ধরাতলে কোথা তার তুল! (২০০৮)
করি হর্ষ বরিষণ, কে গো তুমি সুলোচনএমন মধুর রূপে, রাজিলে মরম তলে? তোমাসম কেহ নাহি, এতদিন দিবাযামীদেখেছি যে সুস্বপন, আজিকে পাইল তাহা মূরতি। আজিকে মরমতলে ফুটিল কুসুম কতস্বরগ কাননসম পাখি করিল কাকলী।চারিদিকে নবরূপে পুরাতন সাজিতেছেবিপুল বরণ লয়ে যেন সবে খেলিতেছে…
ক্রীতদাস আমি তব নিতান্ত কাতর!কৃপা যদি নাহি করো অধমের পর,কোথা লভিব শরণ ত্রিভুবন মাঝে? যেথা তব রাজদণ্ড উজলিয়া রাজে,তারি তুচ্ছ প্রজা হয়ে কাটাই জীবনইহার অধিক কিছু নাহি প্রয়োজন। (২০০৮)
বেলা হলো ভোর ভরিয়া আচোর তুলিবি কি ফুল?তবে ত্বরা চল হেসে খলখল তুলিবি মুকুল।কত যে কুসুম ফুটেছে দেখিবি হইয়ে বিভোরশাখায় শাখায় শেফালি বকুল ভরিবে কোচড়। (২০০৭)
